ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা গণপরিবহণে হয়রানির শিকার ৮৭ শতাংশ নারী উইশ ফাউন্ডেশনের নাসিমা ইসলামের ঝুলিতে টাওয়ার হ্যামলেটস সিভিক অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা বাড়ছে! প্রয়াত চেয়ারম্যান সৈয়দ কওছর আহমদ স্মরণে ওসমানীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে দোয়া মাহফিল সিলেট টেস্টে দায়িত্ব পালনকালে নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠেই হেরে গেল টাইগাররা ফ্রান্সে অভিবাসীদের সেবার প্রত্যয়ে ফ্রাঙ্কো-বাংলা স্কুলের নতুন অফিসের উদ্বোধন সিলেট জেলার শ্রেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বাংলাদেশের বাঁধ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ, সীমান্তে প্রতিনিধিদল

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৪০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

পহেলগাম হামলায় পর্যটকদের ত্রাতা দুই বোন মুমতাজ এবং রুবিনা। ছবি: সংগৃহীত।

অভিবাসন ডেস্ক :: ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামের সাম্প্রতিক বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

এই হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। দুই পক্ষই প্রতিশোধমূলক পাল্টপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া দুই দেশই সীমান্তে বাড়াচ্ছে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি।

এদিকে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এ হামলায় ভারতীয়রা পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পাশাপাশি কাশ্মীরি মুসলমানদেরকেও বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করছেন। তবে এসবের মধ্যেই বেরিয়ে আসছে হামলাকারীদের হাত থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা কাশ্মিরী দুই বীরঙ্গনার দুঃসাহসিক গল্প।

রুবিনা ও মুমতাজ নামের এ দুই বোনের প্রচণ্ড সাহসিকতার জন্যই প্রাণে বেঁচে যায় বেশ কয়েকজন পর্যটকদের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রুবিনা ও মুমতাজ দুজন বোন। তারা বাড়ি বৈসরন উপত্যকার আশেপাশেই। পর্যটকদের ‘গাইড’ হিসাবে কাজ করে। বৈসরন উপত্যকা হাতের তালুর মতো চেনা এ দুই বোনের। পর্যটকদের বৈসরনের ইকোপার্কে নিয়ে যাওয়া, তাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখানোর কাজ করেন তারা।

স্থানীয়দের কাছে রুবিনা ‘কাশ্মীরের খরগোশ কন্যা’ নামে পরিচিত। কারণ, পর্যটকেরা বৈসরনে এলে তাদের হাতে নিজের পোষা খরগোশ তুলে দেয় রুবিনা। সামান্য টাকার বিনিময়ে তারপর ওই পোষ্যের সঙ্গে পর্যটকদের ছবি তুলে দেন তিনি। বৈসরনে পর্যটকদের সঙ্গেই ওদের দিন কেটে যায়। কিন্তু গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার, দিনটা ছিল অন্যরকম। আর ওই দিনেই দুই বোনকেও দেখা গিয়েছে অন্য এক দুঃসাহসিক ভূমিকায়। যা প্রশংসিত হচ্ছে গোটা ভারতজুড়ে।

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যদিনের মতো ওই দিনও চেন্নাইয়ের বেশ কয়েকজন পর্যটকের ‘গাইড’ হিসাবে গিয়েছিল রুবিনা, মুমতাজ। দুপুরের দিকে যখন অস্ত্রধারীরা হামলা চালায় তখন রুবিনা এবং মুমতাজ নিজেদের জীবনের পরোয়া না করে তাদের সঙ্গে যাওয়া পর্যটক এবং আরও বেশ কিছু পর্যটককে রাস্তা দেখিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন।

শুধু তা-ই নয়, পর্যটকদের সঙ্গে থাকা শিশুদের যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, আগলে নিয়ে যায় দুই বোন। প্রথমে কয়েক জন পর্যটককে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেন। তারপর আবার আরও এক দলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন। এভাবে বেশ কয়েক বার ছুটে ছুটে গিয়ে পর্যটকদের ভাগে ভাগে নিয়ে আসে দুই বোন। এমনকি এই পরিস্থিতিতে কী করতে হবে পর্যটকদের সব কিছু বুঝিয়েও দিয়েছিল তারা।

বিষয়টি নিয়ে রুবিনা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই সময় আমরা নিজেদের সুরক্ষার কথা না ভেবে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তারা হাঁটতে পারছিল না। সকলে ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছিল। সকলেই শুধু বলছিল, আমাদের বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও।’

পাহাড়ি রাস্তা, জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পর্যটকদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে রুবিনা এবং মুমতাজ। তারপর তাদের সবাইকে নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে দুই বোন।

ট্যাগস :

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা

আপডেট সময় ০৩:৪০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

অভিবাসন ডেস্ক :: ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামের সাম্প্রতিক বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

এই হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। দুই পক্ষই প্রতিশোধমূলক পাল্টপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া দুই দেশই সীমান্তে বাড়াচ্ছে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি।

এদিকে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এ হামলায় ভারতীয়রা পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পাশাপাশি কাশ্মীরি মুসলমানদেরকেও বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করছেন। তবে এসবের মধ্যেই বেরিয়ে আসছে হামলাকারীদের হাত থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা কাশ্মিরী দুই বীরঙ্গনার দুঃসাহসিক গল্প।

রুবিনা ও মুমতাজ নামের এ দুই বোনের প্রচণ্ড সাহসিকতার জন্যই প্রাণে বেঁচে যায় বেশ কয়েকজন পর্যটকদের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রুবিনা ও মুমতাজ দুজন বোন। তারা বাড়ি বৈসরন উপত্যকার আশেপাশেই। পর্যটকদের ‘গাইড’ হিসাবে কাজ করে। বৈসরন উপত্যকা হাতের তালুর মতো চেনা এ দুই বোনের। পর্যটকদের বৈসরনের ইকোপার্কে নিয়ে যাওয়া, তাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখানোর কাজ করেন তারা।

স্থানীয়দের কাছে রুবিনা ‘কাশ্মীরের খরগোশ কন্যা’ নামে পরিচিত। কারণ, পর্যটকেরা বৈসরনে এলে তাদের হাতে নিজের পোষা খরগোশ তুলে দেয় রুবিনা। সামান্য টাকার বিনিময়ে তারপর ওই পোষ্যের সঙ্গে পর্যটকদের ছবি তুলে দেন তিনি। বৈসরনে পর্যটকদের সঙ্গেই ওদের দিন কেটে যায়। কিন্তু গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার, দিনটা ছিল অন্যরকম। আর ওই দিনেই দুই বোনকেও দেখা গিয়েছে অন্য এক দুঃসাহসিক ভূমিকায়। যা প্রশংসিত হচ্ছে গোটা ভারতজুড়ে।

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যদিনের মতো ওই দিনও চেন্নাইয়ের বেশ কয়েকজন পর্যটকের ‘গাইড’ হিসাবে গিয়েছিল রুবিনা, মুমতাজ। দুপুরের দিকে যখন অস্ত্রধারীরা হামলা চালায় তখন রুবিনা এবং মুমতাজ নিজেদের জীবনের পরোয়া না করে তাদের সঙ্গে যাওয়া পর্যটক এবং আরও বেশ কিছু পর্যটককে রাস্তা দেখিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন।

শুধু তা-ই নয়, পর্যটকদের সঙ্গে থাকা শিশুদের যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, আগলে নিয়ে যায় দুই বোন। প্রথমে কয়েক জন পর্যটককে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেন। তারপর আবার আরও এক দলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন। এভাবে বেশ কয়েক বার ছুটে ছুটে গিয়ে পর্যটকদের ভাগে ভাগে নিয়ে আসে দুই বোন। এমনকি এই পরিস্থিতিতে কী করতে হবে পর্যটকদের সব কিছু বুঝিয়েও দিয়েছিল তারা।

বিষয়টি নিয়ে রুবিনা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই সময় আমরা নিজেদের সুরক্ষার কথা না ভেবে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তারা হাঁটতে পারছিল না। সকলে ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছিল। সকলেই শুধু বলছিল, আমাদের বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও।’

পাহাড়ি রাস্তা, জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পর্যটকদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে রুবিনা এবং মুমতাজ। তারপর তাদের সবাইকে নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে দুই বোন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471