ঢাকা ০৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাদা পাথর বনাব কালো প্রশাসন বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার আনোয়ার ইব্রাহিমের লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘বিদেশি’ গানে ছেঁড়া জাতীয় পতাকা: আইনগত দিক, নৈতিক প্রশ্ন ও সচেতনতার প্রয়োজন প্যারিসে ফ্রান্স দর্পণের ১০ বছর পূর্তি ও কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রথমবারের মতো অ-২০ নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে বাংলাদেশ সৌদি আরবে এক সপ্তাহে গ্রেফতার ২২ হাজার বিদেশি কিশোর রবিউলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বুলবুলকে প্রধান আসামী করে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের মহাখালী ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে জিপের ধাক্কা, নিহত দুই ব্যবসায়ী সাংবাদিক তুহিন হত্যায় গ্রেপ্তার আসামির দোষ স্বীকার নানা অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আয়েবা’র মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ

সাদা পাথর বনাব কালো প্রশাসন

জামিউল আহমেদ :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সেই মনোলোভা পর্যটক আকর্ষণ তথা ভোলাগঞ্জের “সাদা পাথর” আর নেই। চোর আর লুটেরা সবাই মিলে সাদা পাথরের সবটুকু লুট করে নিয়ে গেছে। তাও আবার প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে। এখন শুধু হতবাক হচ্ছে আকর্ষণীয় সাদা পাথর প্রেমী সেই পর্যটকরা আর হায় হায় করছে সাধারণ মানুষরা। তারপরও যেনো কারো কিছু করার ছিলোনা এবং এখনো নেই। অবশিষ্ট আছে শুধু একটি শব্দ, নেই আর নেই।

তাহলে এ কোন দেশে আমরা বাস করি? আমাদের কারো কি কোন দায়-দায়িত্ব নেই? এসব পর্যটক আকর্ষণ রক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট পর্যটন আইন রয়েছে। তার সাথে রয়েছে “বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়” না্মীয় একটি সুনির্দিষ্টি মন্ত্রণালয় এবং তার অধীনে “বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন” (বাপক) ও “বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড” (বিটিবি) নামীয় রাশভারি প্রশাসন। এদের সবার উপরে রয়েছেন শান-শওকতের উপদেষ্ঠা মহোদয় আর রত্ন-খচিত সচিব। তারপর আছেন স্তরে স্তরে কত কিছিমের বড় বাবু আর ছোট বাবু।

তার সাথে জেলা ভিত্তিক কর্তৃত্বের তথা দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। এদেরকে এই অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল অনেক বছর আগে। তাও আবার স্রেফ সাময়িক দায়িত্ব হিসেবে, যা আজ পর্যন্ত চলছেইতো চলছে। চলুক কিন্তু প্রাপ্ত দায়িত্বের ন্যুনতম কিছু যদি তারা পালন করতো এবং সুনির্দিষ্ট “বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন” প্রয়োগ করা হতো তাহলে এই সাদা পাথরের মত দেশের প্রকৃতি প্রদত্ত এবং সম্ভাবনাময় পর্যটক আকর্ষণগুলো এভাবে একে একে ধ্বংস হয়ে যেতোনা।
এখন প্রশ্ন হলো এই “সাদা পাথর” পর্যটক আকর্ষণটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব কি সরকার এভাবে নিশ্চুপ থেকে এড়িয়ে যেতে পারে? অবশ্যই না এবং কোনভাবেই না। কেন না সরকারের হাতে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা যেমন সুনির্দিষ্ট আইন, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্রণালয়, উপদেষ্ঠা, সচিব, রাশভারী প্রশাসনিক কাঠামো, পর্যাপ্ত লোকবল ইত্যাদি ইত্যাদি সবই রয়েছে। উপরন্তু এদের পিছনে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচও হচ্ছে।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতের এত এত পর্যটন সমিতি, নেতা, পাতিনেতা, খিদমতগার, পদাশ্রয়ী, তেলবাজ এরা সবাই এখন কোথায়? কেনইবা তারা সবাই নীরব? তারা কি তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারেন? অবশ্যই না এবং কোনভাবেই না। কারণ, এই পর্যটন আছে বলেই তারা এতসব সুযোগ-সুবিধা নিতে পারছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য যাই হোক তা করে যাচ্ছেন। এমন কি স্থানীয়ভাবে গজানো অনেক সমাজকর্মী ও মৌসুমী পর্যটন প্রেমী সংগঠন রয়েছেন তারাও কচ্ছপের মত নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন।

সব মিলিয়ে আমাদের এই জাতীয় পর্যটন সম্পদ তখা ঐতিহ্য রক্ষায় যে ব্যর্থতা তার দায়ভাগ কমবেশি গোটা জাতিকেই নিতে হবে। কেন না আমরা যার যার অবস্থান থেকে সবাই নিজ নিজ আইনি দায়িত্ব ছাড়াও সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি এবং হয়েই চলেছি। এমনকি এই ব্যর্থতার জন্য যে লজ্জাটুকু অবশিষ্ট তাও আমরা বেমালুম ভুলে যাচ্ছি। অবশ্য এক্ষেত্রে মূলধারার সংবাদ মাধ্যম এবং বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আগে থেকে সক্রিয় ছিলো এবং এখনো আছে।

আগেই বলেছি, পর্যটন শিল্পের অভিভাবক তথা রক্ষকের দায়িত্বে থাকা সরকারি খাতের একটি অকার্যকর পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ হোমরা-চোমরা ছাড়াও রাশভারী প্রশাসন সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে এক কথায় ব্যর্থ এবং বেহায়ার মতই হোক আর অপরাধীর মতই হোক একেবারে নীরব। অন্যদিকে পরিবেশ উপদেষ্টা আগে একবার ঐ এলাকায় গিয়ে ঘেরাওয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছিলেন। তারপরও সরকার তথা সরকা্রি যথাযথ কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি এবং কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। অবশ্য এখন তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন এটি রক্ষায় তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিকে “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল” তথা বি এন পি জানিয়েছে এই কু-কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের কোম্পানীগঞ্জের সিপাহসালারকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই সিপাহসালারকে সরিয়ে দেয়াই কি যথেষ্ট? যে জাতীয় সম্পদ ওরা লুট করে নিয়ে গেলো তা ফিরিয়ে দেয়াসহ প্রচলিত আইনে শাস্তি দেয়ার আদৌ কোন ব্যবস্থা কি নেয়া হবে? নাকি তা গতানুগতিক লোক দেখানোর মধ্যেই সীমিত থাকবে? অবশ্য বিভিন্ন সূত্র বলছে এই কু-কর্মে শুধু বি এন পি নয় জামাত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন কি আওয়ামীলীগ সবাই জড়িয়ে পড়ে।

একইভাবে সদাশয় সরকারের কাছে প্রশ্ন, একঃ এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যা স্থানীয় প্রশাসন বিশ কোটি টাকা এবং স্থানীয়রা একশত কোটি টাকা বলছেন তা পূরণের দায়িত্ব সরকার কি এড়াতে পারবে? দুইঃ সাদা পাথর লুটপাটের পর এখন আবার মাটি খুঁড়ে গর্ত করে নীচ থেকে যে পাথর লুটপাট হচ্ছে তা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার জবাব কে দেবে? তিনঃ পর্যটক আকর্ষণ হিসেবে এই সাদা পাথরের যে গুরুত্ব তা টাকার অঙ্কে মেলানো যাবেনা। তাই, দেশি-বিদেশি পর্যটক তথা পরিদর্শকদের কাছে প্রতিষ্ঠিত ও আকর্ষণীয় পর্যটক গন্তব্য হিসেবে সাদা পাথরকে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব পালনের যে ব্যর্থতা তা কি গোটা পর্যটন প্রশাসন এড়াতে পারবে?

অবশ্যই পারবেনা এবং আমরা জানি এর জবাবও কেউ দেবেনা। কেন না অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং চরম শিক্ষা অন্তত তাই বলে। যেজন্য এই পর্যটন প্রশাসনকে একটি স্বাভাবিক ও কার্যকর প্রশাসন বলার কোন সুযোগ আর অবশিষ্ট নেই। এক্ষেত্রে আমরা হয়তো সার্বিকভাবে ব্যর্থ এই প্রশাসনকে “কালো প্রশাসন” বলতে পারি এবং ধিক্কার জানাতে পারি, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। কিন্তু সরকারকে এই চরম ব্যর্থতার পুরো দায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে তাঁর বর্তমান এবং ভবিষ্যত করণীয় স্পষ্ট করতে হবে।

লেখকঃ চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর ট্যুরিজম স্টাডিজ (সিটিএস)।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সাদা পাথর বনাব কালো প্রশাসন

সাদা পাথর বনাব কালো প্রশাসন

আপডেট সময় ০৬:১৮:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

জামিউল আহমেদ :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সেই মনোলোভা পর্যটক আকর্ষণ তথা ভোলাগঞ্জের “সাদা পাথর” আর নেই। চোর আর লুটেরা সবাই মিলে সাদা পাথরের সবটুকু লুট করে নিয়ে গেছে। তাও আবার প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে। এখন শুধু হতবাক হচ্ছে আকর্ষণীয় সাদা পাথর প্রেমী সেই পর্যটকরা আর হায় হায় করছে সাধারণ মানুষরা। তারপরও যেনো কারো কিছু করার ছিলোনা এবং এখনো নেই। অবশিষ্ট আছে শুধু একটি শব্দ, নেই আর নেই।

তাহলে এ কোন দেশে আমরা বাস করি? আমাদের কারো কি কোন দায়-দায়িত্ব নেই? এসব পর্যটক আকর্ষণ রক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট পর্যটন আইন রয়েছে। তার সাথে রয়েছে “বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়” না্মীয় একটি সুনির্দিষ্টি মন্ত্রণালয় এবং তার অধীনে “বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন” (বাপক) ও “বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড” (বিটিবি) নামীয় রাশভারি প্রশাসন। এদের সবার উপরে রয়েছেন শান-শওকতের উপদেষ্ঠা মহোদয় আর রত্ন-খচিত সচিব। তারপর আছেন স্তরে স্তরে কত কিছিমের বড় বাবু আর ছোট বাবু।

তার সাথে জেলা ভিত্তিক কর্তৃত্বের তথা দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। এদেরকে এই অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল অনেক বছর আগে। তাও আবার স্রেফ সাময়িক দায়িত্ব হিসেবে, যা আজ পর্যন্ত চলছেইতো চলছে। চলুক কিন্তু প্রাপ্ত দায়িত্বের ন্যুনতম কিছু যদি তারা পালন করতো এবং সুনির্দিষ্ট “বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন” প্রয়োগ করা হতো তাহলে এই সাদা পাথরের মত দেশের প্রকৃতি প্রদত্ত এবং সম্ভাবনাময় পর্যটক আকর্ষণগুলো এভাবে একে একে ধ্বংস হয়ে যেতোনা।
এখন প্রশ্ন হলো এই “সাদা পাথর” পর্যটক আকর্ষণটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব কি সরকার এভাবে নিশ্চুপ থেকে এড়িয়ে যেতে পারে? অবশ্যই না এবং কোনভাবেই না। কেন না সরকারের হাতে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা যেমন সুনির্দিষ্ট আইন, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্রণালয়, উপদেষ্ঠা, সচিব, রাশভারী প্রশাসনিক কাঠামো, পর্যাপ্ত লোকবল ইত্যাদি ইত্যাদি সবই রয়েছে। উপরন্তু এদের পিছনে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচও হচ্ছে।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতের এত এত পর্যটন সমিতি, নেতা, পাতিনেতা, খিদমতগার, পদাশ্রয়ী, তেলবাজ এরা সবাই এখন কোথায়? কেনইবা তারা সবাই নীরব? তারা কি তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারেন? অবশ্যই না এবং কোনভাবেই না। কারণ, এই পর্যটন আছে বলেই তারা এতসব সুযোগ-সুবিধা নিতে পারছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য যাই হোক তা করে যাচ্ছেন। এমন কি স্থানীয়ভাবে গজানো অনেক সমাজকর্মী ও মৌসুমী পর্যটন প্রেমী সংগঠন রয়েছেন তারাও কচ্ছপের মত নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন।

সব মিলিয়ে আমাদের এই জাতীয় পর্যটন সম্পদ তখা ঐতিহ্য রক্ষায় যে ব্যর্থতা তার দায়ভাগ কমবেশি গোটা জাতিকেই নিতে হবে। কেন না আমরা যার যার অবস্থান থেকে সবাই নিজ নিজ আইনি দায়িত্ব ছাড়াও সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি এবং হয়েই চলেছি। এমনকি এই ব্যর্থতার জন্য যে লজ্জাটুকু অবশিষ্ট তাও আমরা বেমালুম ভুলে যাচ্ছি। অবশ্য এক্ষেত্রে মূলধারার সংবাদ মাধ্যম এবং বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আগে থেকে সক্রিয় ছিলো এবং এখনো আছে।

আগেই বলেছি, পর্যটন শিল্পের অভিভাবক তথা রক্ষকের দায়িত্বে থাকা সরকারি খাতের একটি অকার্যকর পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ হোমরা-চোমরা ছাড়াও রাশভারী প্রশাসন সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে এক কথায় ব্যর্থ এবং বেহায়ার মতই হোক আর অপরাধীর মতই হোক একেবারে নীরব। অন্যদিকে পরিবেশ উপদেষ্টা আগে একবার ঐ এলাকায় গিয়ে ঘেরাওয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছিলেন। তারপরও সরকার তথা সরকা্রি যথাযথ কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি এবং কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। অবশ্য এখন তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন এটি রক্ষায় তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিকে “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল” তথা বি এন পি জানিয়েছে এই কু-কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের কোম্পানীগঞ্জের সিপাহসালারকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই সিপাহসালারকে সরিয়ে দেয়াই কি যথেষ্ট? যে জাতীয় সম্পদ ওরা লুট করে নিয়ে গেলো তা ফিরিয়ে দেয়াসহ প্রচলিত আইনে শাস্তি দেয়ার আদৌ কোন ব্যবস্থা কি নেয়া হবে? নাকি তা গতানুগতিক লোক দেখানোর মধ্যেই সীমিত থাকবে? অবশ্য বিভিন্ন সূত্র বলছে এই কু-কর্মে শুধু বি এন পি নয় জামাত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন কি আওয়ামীলীগ সবাই জড়িয়ে পড়ে।

একইভাবে সদাশয় সরকারের কাছে প্রশ্ন, একঃ এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যা স্থানীয় প্রশাসন বিশ কোটি টাকা এবং স্থানীয়রা একশত কোটি টাকা বলছেন তা পূরণের দায়িত্ব সরকার কি এড়াতে পারবে? দুইঃ সাদা পাথর লুটপাটের পর এখন আবার মাটি খুঁড়ে গর্ত করে নীচ থেকে যে পাথর লুটপাট হচ্ছে তা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার জবাব কে দেবে? তিনঃ পর্যটক আকর্ষণ হিসেবে এই সাদা পাথরের যে গুরুত্ব তা টাকার অঙ্কে মেলানো যাবেনা। তাই, দেশি-বিদেশি পর্যটক তথা পরিদর্শকদের কাছে প্রতিষ্ঠিত ও আকর্ষণীয় পর্যটক গন্তব্য হিসেবে সাদা পাথরকে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব পালনের যে ব্যর্থতা তা কি গোটা পর্যটন প্রশাসন এড়াতে পারবে?

অবশ্যই পারবেনা এবং আমরা জানি এর জবাবও কেউ দেবেনা। কেন না অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং চরম শিক্ষা অন্তত তাই বলে। যেজন্য এই পর্যটন প্রশাসনকে একটি স্বাভাবিক ও কার্যকর প্রশাসন বলার কোন সুযোগ আর অবশিষ্ট নেই। এক্ষেত্রে আমরা হয়তো সার্বিকভাবে ব্যর্থ এই প্রশাসনকে “কালো প্রশাসন” বলতে পারি এবং ধিক্কার জানাতে পারি, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। কিন্তু সরকারকে এই চরম ব্যর্থতার পুরো দায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে তাঁর বর্তমান এবং ভবিষ্যত করণীয় স্পষ্ট করতে হবে।

লেখকঃ চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর ট্যুরিজম স্টাডিজ (সিটিএস)।

 


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471