ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভ্রমণের সময় বমি প্রতিরোধে করণীয়

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:১৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী : অনেকেই আছেন, গাড়িতে চড়লেই বমি করেন বা বমি বমি ভাবের জন্য অস্বস্তি বোধ করেন। মোশন সিকনেস সাধারণত বাস, কার, ট্রেন বা উড়োজাহাজে যাত্রাকালীন অসুস্থতাকে বোঝায়।

ভ্রমণে বমি কেন হয়?

বমির জন্য দায়ী আমাদের অন্তঃকর্ণের সমন্বয়হীনতা। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে আমাদের কানের ভেতরের ফ্লুইড নড়াচড়া করে, যার কারণে অন্তঃকর্ণ ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি মুভ করে, কিন্তু এদিকে আমাদের চোখ আবার ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয় বডি স্থির আছে, অর্থাৎ শরীর নড়াচড়া করছে না। এ দুই রকম তথ্যের জন্য মস্তিষ্কে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়! এ ধরনের অবস্থাকে ব্রেইন বিষ হিসেবে শনাক্ত করে! তাই বিষকে বডি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যাত্রাকালে বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়।

মোশন সিকনেস বা জার্নিতে বমির সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

১. বাসে বসে ঘুমিয়ে গেলে আর বমি আসে না, কারণ চোখ তখন ইনফরমেশন দেয় না। ফলে ব্রেইনে কোনো কনফিউশন তৈরি হয় না। ঘুম না এলেও হালকাভাবে দুই চোখ বন্ধ রাখুন। অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। উপকারে আসবে।

২. এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন। জানালাটা খুলে দিন। শরীরে বাতাস লাগলে ভালো লাগবে।

৩. গাড়িতে আড়াআড়িভাবে বা যেদিকে গাড়ি চলছে, সেদিকে পেছন দিয়ে বসবেন না। এতে বমি বা বমি বমি ভাবের আশঙ্কা থাকে। গাড়ি যেদিকে মুখ করে এগোচ্ছে, তার বিপরীত দিকে মুখ করে থাকা শুধু মোশন সিকনেসই দেবে না, তা বিপজ্জনকও। এ ছাড়া অনেক গাড়িতে বিপরীতমুখী সিট থাকে। আপনার যদি ঘন ঘন মোশন সিকনেস হয়, তাহলে সেসব সিটে বসবেন না। এ ছাড়া পেছনের সিটে বসা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যানবাহনের পেছনের অংশই বেশি ঝাঁকি খায়, তা থেকে মোশন সিকনেস হতে পারে।

৪. যাদের এই সমস্যা আছে, তারা যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না।

৫. কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো বমি বা বমি বমি ভাব বন্ধ করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাহনে ওঠার আগেই এ ধরনের ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।

৬. গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়।

৭. গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে– এমন চিন্তা মনে আনা যাবে না। যাদের এই সমস্যা আছে, তারা ব্যাগে কয়েকটা লেবুপাতা রাখতে পারেন। গাড়িতে চড়ে সেটি নাকের কাছে ধরে রাখবেন।

লেখক : নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।

ট্যাগস :

ভ্রমণের সময় বমি প্রতিরোধে করণীয়

আপডেট সময় ০৬:১৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী : অনেকেই আছেন, গাড়িতে চড়লেই বমি করেন বা বমি বমি ভাবের জন্য অস্বস্তি বোধ করেন। মোশন সিকনেস সাধারণত বাস, কার, ট্রেন বা উড়োজাহাজে যাত্রাকালীন অসুস্থতাকে বোঝায়।

ভ্রমণে বমি কেন হয়?

বমির জন্য দায়ী আমাদের অন্তঃকর্ণের সমন্বয়হীনতা। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে আমাদের কানের ভেতরের ফ্লুইড নড়াচড়া করে, যার কারণে অন্তঃকর্ণ ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি মুভ করে, কিন্তু এদিকে আমাদের চোখ আবার ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয় বডি স্থির আছে, অর্থাৎ শরীর নড়াচড়া করছে না। এ দুই রকম তথ্যের জন্য মস্তিষ্কে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়! এ ধরনের অবস্থাকে ব্রেইন বিষ হিসেবে শনাক্ত করে! তাই বিষকে বডি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যাত্রাকালে বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়।

মোশন সিকনেস বা জার্নিতে বমির সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

১. বাসে বসে ঘুমিয়ে গেলে আর বমি আসে না, কারণ চোখ তখন ইনফরমেশন দেয় না। ফলে ব্রেইনে কোনো কনফিউশন তৈরি হয় না। ঘুম না এলেও হালকাভাবে দুই চোখ বন্ধ রাখুন। অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। উপকারে আসবে।

২. এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন। জানালাটা খুলে দিন। শরীরে বাতাস লাগলে ভালো লাগবে।

৩. গাড়িতে আড়াআড়িভাবে বা যেদিকে গাড়ি চলছে, সেদিকে পেছন দিয়ে বসবেন না। এতে বমি বা বমি বমি ভাবের আশঙ্কা থাকে। গাড়ি যেদিকে মুখ করে এগোচ্ছে, তার বিপরীত দিকে মুখ করে থাকা শুধু মোশন সিকনেসই দেবে না, তা বিপজ্জনকও। এ ছাড়া অনেক গাড়িতে বিপরীতমুখী সিট থাকে। আপনার যদি ঘন ঘন মোশন সিকনেস হয়, তাহলে সেসব সিটে বসবেন না। এ ছাড়া পেছনের সিটে বসা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যানবাহনের পেছনের অংশই বেশি ঝাঁকি খায়, তা থেকে মোশন সিকনেস হতে পারে।

৪. যাদের এই সমস্যা আছে, তারা যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না।

৫. কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো বমি বা বমি বমি ভাব বন্ধ করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাহনে ওঠার আগেই এ ধরনের ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।

৬. গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়।

৭. গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে– এমন চিন্তা মনে আনা যাবে না। যাদের এই সমস্যা আছে, তারা ব্যাগে কয়েকটা লেবুপাতা রাখতে পারেন। গাড়িতে চড়ে সেটি নাকের কাছে ধরে রাখবেন।

লেখক : নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।