“আজ ২৭ শে সেপ্টেম্ব্রর, বিশ্ব পর্যটন দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, “Tourism and sustainable transformation” বা পর্যটনের টেকসই রূপান্তর। প্রতিবারের মত এবারও এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিস্তারিভাবে লিখেছেন পর্যটন ব্যক্তিত্ব, লেখক ও গবেষক জনাব জামিউল আহমেদ।
শুধু পর্যটন শিল্পই নয় আমাদের গ্রহকেও টিকে থাকার জন্য টেকসই পর্যটন অপরিহার্য। তাই টেকসই পর্যটনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশ, সমাজ এবং অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব কমানো। এই টেকসই পর্যটনের যাত্রা শুরু খুব একটা বেশি দিনের নয়। ১৯৯২ সালে রিও ডি জেনেরিওতে যখন জাতিসংঘের আর্থ সামিট অনুষ্ঠিত হয় তখনই কেবল টেকসই পর্যটনের ভিত্তি স্থাপন হয়। তারপর ১৯৯৫ সালে টেকসই পর্যটন বিষয়ক প্রথম বিশ্ব সম্মেলনের মাধ্যমে এই ধারণাটি আরো গতি লাভ করে।
তবে, এই জনপ্রিয় “টেকসই পর্যটন” শব্দটি কিন্তু ১৯৯৩ সালেই বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে আবির্ভূত হতে শুরু করেছিলো। পরোবর্তীতে ২০০৫ সালে “জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা” এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচী পরিবেশগত, সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধার উপর জোর দিয়ে এই টেকসই পর্যটনের জন্য নির্দেশিকা প্রকাশ করে। এভাবে ২০১৭ সালে এসে নীতিমালার আনুষ্ঠানিকীকরণ এবং আন্তর্জাতিক বর্ষ উৎসর্গীকরণ টেকসই পর্যটন বিষয়টির গুরুত্বকে আরো দৃঢ় করে তোলে।
এর মধ্যে টেকসই উন্নয়ন প্রথম তার সহযোগী হিসেবে পায় ইকো-ট্যুরিজম বা পরিবেশ পর্যটনকে। ইকোট্যুরিজম হল প্রকৃতি-ভিত্তিক পর্যটনের একটি রূপ যা প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়, যা সাধারণত ন্যূনতম প্রভাবশালী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং সংরক্ষণ ও পরিবেশগত শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই অবদান রাখে। প্রাকৃতিক অঞ্চলে দায়িত্বশীল ভ্রমণের ধারণা আগে থেকে বিদ্যমান থাকলেও, ইকোট্যুরিজমকে একটি স্বতন্ত্র ধারণা হিসেবে আনুষ্ঠানিকীকরণ এবং টেকসই পর্যটন পদ্ধতি হিসেবে এর ব্যাপক স্বীকৃতি ১৯৮০-এর দশকে শিকড় গেড়েছিল। ইকোট্যুরিজম টেকসই পর্যটন ক্ষেত্রের একটি উপ-উপাদান। যেজন্য ইকোট্যুরিজমকে অবশ্যই পরিবেশগত সুবিধাকে সর্বাধিক করে তুলতে হয় এবং একই সাথে ইকোট্যুরিজম স্থানের কাছাকাছি বসবাসকারী সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কল্যাণে অবদান রাখতে হয়। এসব কারণে ইকোট্যুরিজমকে প্রায়শই পর্যটনের একটি দায়িত্বশীল রূপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় বটে, কিন্তু এটি বেশ কিছু ঝুঁকি বহন করে। যেজন্য দেখা গেলো টেকসই পর্যটন তার যাত্রা পথকে আশানুরূপভাবে মসৃণ করতে পারছেনা। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০০২ সালের কেপটাউন ঘোষণাপত্রে সবাই একমত হয়েছে যে, দায়িত্বশীল পর্যটন নেতিবাচক অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাব কমিয়ে আনে। স্থানীয় জনগণের জন্য অধিকতর অর্থনৈতিক সুবিধা তৈরি করে এবং আবাসিক সম্প্রদায়ের মঙ্গল বা কল্যাণ বৃদ্ধি করে; কর্মপরিবেশ এবং শিল্পে প্রবেশাধিকার উন্নত করে। অর্থাৎ দায়িত্বশীল পর্যটন হলো “মানুষের বসবাসের এবং ভ্রমণের জন্য আরও ভালো জায়গা তৈরি করা।” তাই দায়িত্বশীল পর্যটনের জন্য প্রয়োজন হয়ে পড়ে ট্যুর অপারেটর; হোটেল মালিক; সরকার; স্থানীয় জনগণ; এন জি ও; নারী; গণমাধ্যম এবং পর্যটকদের প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পাশাপাশি পর্যটনকে আরও টেকসই করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এরপর থেকেই টেকসই পর্যটন বিশেষ গুরুত্ব পেতে থাকে এবং তাতে আশানুরূপ ফলও পাওয়া যায়। যেজন্য পরবর্তীতে এবং ২০১৫ সালে জাতিসঙ্ঘ “সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল” (এসডিজি) বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা দেয়। এই এসডিজি’র মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্রতা নিরসন। এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় হচ্ছে, এসডিজি’র জন্য নির্ধারিত সতেরোটি লক্ষ্যমাত্রার অন্তত চারটি প্রত্যক্ষভাবে এবং বাকীগুলো পরোক্ষভাবে পর্যটন সম্পৃক্ত। এসব বিবেচনায় নিয়ে জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা বা ইউএনডাবলুটিও “ট্যুরিজম এন্ড সাসটেনেবল ট্র্যান্সফরমেশন” বা “পর্যটনের টেকসই রূপান্তর” welqwU ২০২৫ সালের বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবে নির্বাচিত করেছে। কেন না প্রতি বছর ২৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয় এই বিশ্ব পর্যটন দিবস। জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা বা ইউএনডাবলুটিও ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরে এই দিবসটি ঘোষণা করে এবং ১৯৮০ সালে এটি শুরু হয়। দিবসটি মূলত ১৯৭০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার সংবিধি গৃহীত হওয়ার বার্ষিকীকে স্মরণ করে। তবে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে পর্যটনের গুরুত্ব এবং এর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মূল্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।”
জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা বা ইউ এন ডাবলু টি ও কর্তৃক নির্বাচিত এবারের এই প্রতিপাদ্যটি পর্যটনকে আরও টেকসই অনুশীলনের দিকে বিকশিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয় যা পরিবেশ রক্ষা করে, স্থানীয় সংস্কৃতিকে সম্মান করে এবং সম্প্রদায়ের উপকার করে। অর্থাৎ পর্যটন শিল্পের টেকসই রূপান্তর বলতে এমন এক প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয় যেখানে পরিবেশগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বিবেচনা করে পর্যটনের উন্নয়ন ঘটানো হয়। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ সংরক্ষিত থাকে এবং পর্যটনের ইতিবাচক প্রভাব স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর পড়ে।
লক্ষ্যনীয়, বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে “জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা” বিবেচনায় নিয়ে থাকে পর্যটনের সমসাময়িক কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে। তার সাথে বিষয় নির্বাচনের যৌক্তিকতাকেও তুলে ধরা হয় প্রকাশিত একটি ধারণাপত্রের মাধ্যমে। তাই এবারের এই ধারণাপত্রে বলা হয়েছে, বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৫ ইতিবাচক পরিবর্তনের বাহক হিসেবে পর্যটনের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। তবে, এই সম্ভাবনা উপলব্ধি করার জন্য শুধু প্রবৃদ্ধিই নয় তার চেয়ে বেশি কিছুর প্রয়োজন। এই প্রয়োজনের মধ্যে রয়েছে সুশাসন, কৌশলগত পরিকল্পনা, শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্পষ্ট অগ্রাধিকার নির্ধারণ। পর্যটন অর্থনৈতিক খাতের চেয়েও বেশি কিছু যেহেতু এটি সামাজিক অগ্রগতির জন্য একটি অনুঘটক। যা কিনা শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সকলের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে থাকে। এই সুবিধাগুলি উন্মোচন করার জন্য একটি সুচিন্তিত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি অপরিহার্য। যা পর্যটন উন্নয়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূলে স্থায়িত্ব, স্থিতিস্থাপকতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিস্থাপন করে। এজন্য টেকসই পর্যটন রূপান্তর শুরু করতে হবে কার্যকর শাসনব্যবস্থা এবং জনকেন্দ্রিক পরিকল্পনার মাধ্যমে। শিক্ষা এবং দক্ষতার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপারটি বিশেষ করে যুব, মহিলা এবং ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়গুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন না পর্যটনের প্রবৃদ্ধির প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উদীয়মান গন্তব্যস্থলগুলির প্রায় অর্ধেক তরুণ-তরুণীর কার্যকরভাবে অংশগ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার এবং অংশীদারদের অবশ্যই সহজলভ্য, উচ্চমানের শিক্ষামূলক কর্মসূচি এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পর্যটন খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবং ব্যক্তিবর্গের উৎকর্ষ সাধন করেই কেবল আমাদের সম্মিলিত অগ্রগতিতে অর্থপূর্ণ অবদান রাখার ক্ষমতা প্রদানের জন্য এগুলি তৈরি করা উচিত। এজন্য পর্যটনকেও কৌশলগত উদ্ভাবন এবং দায়িত্বশীল উদ্যোক্তা দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। ডিজিটালাইজেশন এবং উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক মডেলগুলি প্রচুর সুযোগ তৈরি করে। এতেকরে এমএসএমই এবং স্টার্টআপগুলি বিশেষ করে যেগুলি নারী ও যুবসমাজের নেতৃত্বে হয়ে থাকে সেগুলি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধি এবং টেকসই অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। অন্যদিকে, টেকসই বিনিয়োগও রূপান্তরের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। তবে, বিনিয়োগকে দীর্ঘমেয়াদী সম্প্রদায়গুলোর সুবিধা, স্থিতিস্থাপকতা তৈরি এবং জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তার সাথে বিনিয়োগকে আরও স্মার্ট এবং টেকসই হতে হবে। জাতিসংঘের পর্যটন নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত টেকসই পর্যটন বিনিয়োগের সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের অবশ্যই জলবায়ু লক্ষ্য, সামাজিক প্রভাব এবং উদ্ভাবনের সাথে প্রবৃদ্ধিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়াও প্রাকৃতিক সম্পদের দায়িত্বশীল তত্ত্বাবধান আরেকটি মূল উপাদান। এজন্য পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই সক্রিয়ভাবে তাদের প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে। আবার স্থিতিস্থাপক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করতে হবে যাতে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সম্পদের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়।
পরিশেষে এই বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আহবান জানিয়ে বলা হয়েছে – আসুন আমরা পর্যটনকে পদ্ধতিগত এবং টেকসই রূপান্তরের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই যা কার্যকর শাসনব্যবস্থা, কৌশলগত পরিকল্পনা, কঠোর পর্যবেক্ষণ এবং স্পষ্ট সম্মিলিত অগ্রাধিকার দ্বারা পরিচালিত। আসুন, সকলের জন্য আরও টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য পর্যটনের পূর্ণ সম্ভাবনা উপলব্ধি করি।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন হচ্ছে, পর্যটনের বিশ্ব মুরুব্বী “জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা” এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যে বয়ান দিয়েছে এবং তার সাথে করণীয় নিয়ে যে আহবান রেখেছে তার সাথে বাংলাদেশ কি তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রয়োজনী প্রস্তুতি নিয়ে দিবসটি পালন করবে? উত্তর এক কথায় না সূচক। কেন না অতীতে আমাদের যে তিক্ত অভিজ্ঞতা তাতেও কোন ভরসা করার সুযোগ নেই। অবশ্য এমন কিছু বলার পিছনে যে কারণগুলো কাজ করছে তা হলো –
একঃ সাধারণভাবে দিবসটি পালনের জন্য জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার যে নির্দেশনা বা পরামর্শ রয়েছে তার মাত্র এক চতুর্থাংশও আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ কাজে লাগায়নি বা লাগাতে পারেনি। যা কিছুই কর্মসূচী নেয়া হয় তা থাকে গতানুগতিক এবং স্রেফ লোক দেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ।
দুইঃ দিবসটি পালনের মুল উদ্দেশ্য এবং তার সাথে এর চেতনাকে কাজে লাগানোর জন্য যে আন্তরিকতা এবং প্রস্তুতি দরকার তা আমরা কখনো উপলব্দিতেই আনতে পারিনি। এমনকি দিবসটির প্রতিপাদ্যের বাংলা রূপান্তরকে আমরা আমাদের মত করতে গিয়ে এর মূল বিষয়বস্তুকেই শুধু হারাইনা, অসম্মানও করি। যেমনটি বরাবরের মত এবারও আমরা “ট্যুরিজম এন্ড সাসটেনেবল ট্রান্সফরমেশন” এর বাংলা রূপান্তর করেছি “টেকসই উন্নয়নে পর্যটন”। অথচ এটি হওয়ার কথা, “পর্যটনের টেকসই রূপান্তর”।
তিনঃ বিশ্ব পর্যটন দিবসটির উদ্দেশ্য শুধু ২৭ শে সেপ্টেম্বরকে আড়ম্বরতার সাথে পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উপরন্তু নির্বাচিত প্রতিপাদ্যের মূল বক্তব্যের নির্ঝাসকে নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পরোবর্তী এক বছর অর্থাৎ বছরান্তে আবার বিশ্ব পর্যটন দিবস পালনের আগ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করে পর্যটন উন্নয়নকে তরান্বিত করা। অথচ এর কোন ধারে কাছেও বাংলাদেশ কখনো ছিলোনা এবং এখনো নেই।
অতএব যে আন্তরিকতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার অভাবে বাংলাদেশের অতি সম্ভাবনার পর্যটন শিল্প উন্নয়নের পরিবর্তে প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে তা নিশ্চিত করতে না পারলে এবং ক্রমাগত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছার উপর ভর করে চালাতে গেলে এভাবেই প্রতি বছর ২৭ শে সেপ্টেম্বরের বিশ্ব পর্যটন দিবস ঘুরে ঘুরে আসবে আর লোকদেখানো কিছু কর্মসূচীর মাধ্যমে তা পালিতও হবে বটে, কিন্তু তাতে কাজের কাজ যে কিছুই হবেনা এটি প্রায় নিশ্চিত।