অভিবাসন ডেস্ক :: মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে একটা বড় ছাপই রেখে গেছেন। তবে তিনি যা করেছেন, তার চেয়েও ভালো কিছু সম্ভব ছিল মুশফিকের পক্ষে, বিশ্বাস বাংলাদেশের সাবেক কোচ ও টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের।
তিনি মনে করেন যে মুশফিকুর রহিম যদি চার নম্বরে আরও বেশি খেলতে পারতেন, তাহলে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষটা আরও উজ্জ্বল হতে পারত। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
৫ মার্চ ওয়ানডে থেকে অবসর ঘোষণা দেন মুশফিক। পরিসংখ্যান বলছে, ৭,৭৯৫ রান নিয়ে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওয়ানডে রান সংগ্রাহক হিসেবে অবসর নিয়েছেন, তালিকার শীর্ষে রয়েছেন তামিম ইকবাল (৮,৩৫৭ রান)।
চার নম্বরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুশফিক। যেখানে তিনি ১১৮ ইনিংসে ৪,৩৭২ রান করেছেন। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তিনি চার নম্বরে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন, এই সময়কালে ৯৬ ইনিংসে ৩,৭৬২ রান করেছেন, যার ওপরে আছেন কেবল নিউজিল্যান্ডের রস টেলর (৫,১৮২ রান)।
মুশফিক শেষ এক দশকে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন। তার মোট ওয়ানডে রানের ৭০ শতাংশ এসেছে চার নম্বর পজিশন থেকে। তবুও, ২০২৩ সালে তার ব্যাটিং পজিশনে বড় পরিবর্তন আসে। সে বছর তিনি মূলত ছয় নম্বরে ব্যাট করেছেন, মাঝে মাঝে পাঁচ নম্বরে নেমেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মুশফিক ছয় নম্বর ব্যাটার নয়, সে চার নম্বরের ব্যাটার। সে সময় নেয়, আর সেট হয়ে গেলে দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠে। সম্ভবত যদি সে আরও নিয়মিত চার নম্বরে খেলত, তাহলে তার ক্যারিয়ার আরও ভালো হতে পারত।’
খালেদ মাহমুদ আরও জানান, মুশফিক একজন প্রকৃত পেশাদার ক্রিকেটারের উদাহরণ। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, মুশফিক সম্পূর্ণ নিজেকে তৈরি করা একজন ক্রিকেটার, এটা প্রমাণিত। তার ক্যারিয়ার সবার জন্য একটি উদাহরণ।’
মুশফিকের অবসরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক সময় না এক সময় এটা আসতেই হতো, এবং এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, আমাদের সেটাকে সম্মান করা উচিত। সে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রকৃত দূত এবং একজন অসাধারণ লড়াকু খেলোয়াড়। তার ক্যারিয়ার দুর্দান্ত ছিল। সে কঠোর পরিশ্রমী ছিল, শৃঙ্খলাবদ্ধ, নিবেদিতপ্রাণ… সবকিছুই ছিল তার মধ্যে।’
খালেদ মাহমুদের আশা, মুশফিক খেলবেন ১০০ টেস্ট। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি ড্রেসিংরুমে ঢুকি, আমি বলি, ‘মুশিকে অনুসরণ করো।’ আমি দেখতাম, সে সকাল সকাল দৌড়াত, অনুশীলন করত… সত্যিই সে পরিশ্রমী এক খেলোয়াড় ছিল। অবশ্যই খারাপ লাগছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো এই মুহূর্তটা আসবেই। হয়তো সে ভেবেছে, এটাই সঠিক সময়, আমি সেটাকে সম্মান করি। আমি তার জন্য শুভ কামনা করি। সে এখনো টেস্ট ক্রিকেট খেলবে, আর যদি আরও ছয়টি টেস্ট খেলতে পারে, তাহলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়বে। আমি প্রার্থনা করি, সে সুস্থ থাকুক, ফর্মে থাকুক এবং তার টেস্ট ক্যারিয়ারেরও সুন্দর সমাপ্তি ঘটুক।’