অভিবাসন ডেস্ক :: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার একতরফাভাবে ৩০ ঘণ্টার জন্য ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’র ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এর কয়েকঘণ্টা পরই (রোববার) পরস্পরের বিরুদ্ধে ওই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
এদিন ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনের অভিযোগ
রোববার এক এক্স বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ‘সকাল ৬টা পর্যন্ত (ইউক্রেনীয়) সেনাপ্রধান সিরস্কির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রুশ বাহিনীর বিভিন্ন ফ্রন্টে ৫৯টি গোলাবর্ষণ এবং আক্রমণের ৫টি ঘটনা ঘটেছে’।
জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়া কেবল ‘যুদ্ধবিরতির একটি সাধারণ আবহ’ তৈরি করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা নিজেরাই এটা পুরোপুরি মেনে চলেনি।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির সময়ে রাশিয়া ৩০০-রও বেশি গোলাবর্ষণ ও ১৯টি আক্রমণ চালিয়েছে এবং প্রায় ২৯০ বার ড্রোন ব্যবহার করেছে।
জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেন, ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি মধ্যরাতে শেষ হলেও, আমরা ৩০ দিনের জন্য সেটি বাড়ানোর প্রস্তাব আগেই দিয়েছি। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব’।
এর আগে শনিবার রাতে দেওয়া আরেক বিবৃতিতে তিনি জানান, রাশিয়ার কুরস্ক ও বেলগোরোদ সীমান্ত এলাকাতেও লড়াই চলছে।
জেলেনস্কি ওই সময় বলেন, ‘এই যুদ্ধের একমাত্র উৎস রাশিয়া। পুতিন যখন হামলার তীব্রতা কমাতে আদেশ দেন, তখন লড়াইও কমে। অর্থাৎ রাশিয়াই যুদ্ধ শুরু করেছে এবং তারাই এটি টিকিয়ে রেখেছে’।
রাশিয়ার পাল্টা অভিযোগ
এদিকে জেলেনস্কির বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর রাশিয়া জানায়, ইউক্রেন পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের সুখা বলকা ও বাহাতিরে সামরিক ঘাঁটিতে রাতারাতি হামলা চালিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ৪৮টি ড্রোন ব্যবহার করেছে। ৪৪৪ বার গুলি ও মর্টার হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ, ব্রিয়ানস্ক ও কুরস্ক অঞ্চলে ৯০০ ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এসব হামলায় বেসামরিক লোকজন হতাহত হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূত রোডিওন মিরোশনিকও জানান, ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির সময় দোনেৎস্ক, খেরসন ও লুহানস্ক অঞ্চলের মস্কো-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে একাধিক হামলা চালিয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে যা বোঝা যাচ্ছে, তা হলো- পুতিনের ঘোষিত ৩০ ঘণ্টার সাময়িক এই যুদ্ধবিরতি শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলার কথা। যদিও দুই পক্ষই তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
অন্যদিকে কিয়েভ যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সম্প্রসারণের কথা বললেও, বাস্তবে ময়দানে সংঘর্ষ কমেনি বলেই প্রতীয়মান।