ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলা বলায় আধার কার্ডধারী ভারতীয় যুবককে পাঠানো হলো বাংলাদেশে দুই-দফা নির্বাচন: নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় কি এখন? দুই শর্তে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা যাবে প্রকাশিত হয়েছে ফয়সাল আহমেদ এর নতুন বই “আমার নদী” সাংবাদিকদের সুরক্ষার দাবিতে ইউরো-বাংলা প্রেসক্লাবে ফ্রান্সের ৭ দফা প্রস্তাবনা শীর্ষক আলোচনা সভা জয়াকে দেখে কটাক্ষ করে যা বললেন বিজেপি নেতা উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা: অনিয়ম, অবহেলা নাকি অপরিকল্পিত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা? উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত বেড়ে ২০ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো “সাংবাদিকতা কর্মশালা”—ফরাসি মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি ও গুণগত মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দুবাইয়ে যান্ত্রিক ত্রুটিতে আটকা বিমানের ২৭৫ যাত্রী, ৩২ ঘণ্টা পর দেশের উদ্দেশে যাত্রা

দুই-দফা নির্বাচন: নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় কি এখন?

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৩৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

শফিকুল হক : নির্বাচন একটি দেশের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশে প্রচলিত ভোটিং পদ্ধতি কি এখনো যথাযথভাবে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরছে?

বর্তমানে বাংলাদেশে ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট (FPTP) পদ্ধতি চালু আছে। এটি সহজ, দীর্ঘদিনের চেনা ব্যবস্থা। কিন্তু এই ব্যবস্থায় অনেক ভোটই কার্যত “অপচয়” হয়ে যায়। আপনি যদি এমন একজন প্রার্থীকে ভোট দেন যিনি জিততে পারেননি, তাহলে আপনার কণ্ঠ সংসদে প্রতিফলিতই হয় না। ছোট দলগুলো প্রায়শই বাদ পড়ে যায়, আর জাতীয়ভাবে জনপ্রিয় দলও এলাকাভিত্তিক সীমাবদ্ধতার কারণে কাঙ্ক্ষিত আসন পায় না।

অন্যদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতিতে সব ভোট গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা প্রায়শই জোট সরকারের দিকে ঠেলে দেয়, যার ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগে, রাজনৈতিক সমঝোতা হয় অস্বচ্ছ, আর ভোটারদের সঙ্গে প্রতিনিধিদের দূরত্ব বাড়ে। গণনা পদ্ধতিও বেশ জটিল।

এই দুই চরমের মাঝে একটি ভারসাম্য তৈরি করা সম্ভব—দুই-দফা ভোটিং পদ্ধতির মাধ্যমে।

এই ব্যবস্থায় প্রথমে সাধারণ নির্বাচন হবে। যদি কেউ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান, তবে শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে একটি দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট হবে। এতে করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিজয়ী ব্যক্তি বা দল প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের সমর্থনে নির্বাচিত হয়েছে।

এই পদ্ধতির অনেক ইতিবাচক দিক আছে—ভোটারের ক্ষমতা বাড়ে, কৌশলগত ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়, আর নির্বাচিত প্রার্থীর বৈধতা আরও দৃঢ় হয়। এতে একদিকে যেমন FPTP-এর সরলতা থাকে, অন্যদিকে PR-এর ন্যায্যতাও কিছুটা অর্জন সম্ভব হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি সফলভাবে চালু আছে—ফ্রান্স, চিলি, উরুগুয়ে এমনকি ভারতের কিছু রাজ্যেও পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল ও বিভাজিত বাস্তবতায় দুই-দফা ভোটিং হতে পারে একটি সাহসী কিন্তু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এটি জনগণের প্রতি আস্থা বাড়াবে, প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।

নির্বাচন কেবল বিজয় নির্ধারণের মাধ্যম নয়—এটি হওয়া উচিত জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও মতামতের সঠিক প্রতিফলন।

সাবেক মেয়র, টাওয়ার হ্যামলেটস, লন্ডন

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলা বলায় আধার কার্ডধারী ভারতীয় যুবককে পাঠানো হলো বাংলাদেশে

দুই-দফা নির্বাচন: নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় কি এখন?

আপডেট সময় ১২:৩৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

শফিকুল হক : নির্বাচন একটি দেশের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশে প্রচলিত ভোটিং পদ্ধতি কি এখনো যথাযথভাবে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরছে?

বর্তমানে বাংলাদেশে ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট (FPTP) পদ্ধতি চালু আছে। এটি সহজ, দীর্ঘদিনের চেনা ব্যবস্থা। কিন্তু এই ব্যবস্থায় অনেক ভোটই কার্যত “অপচয়” হয়ে যায়। আপনি যদি এমন একজন প্রার্থীকে ভোট দেন যিনি জিততে পারেননি, তাহলে আপনার কণ্ঠ সংসদে প্রতিফলিতই হয় না। ছোট দলগুলো প্রায়শই বাদ পড়ে যায়, আর জাতীয়ভাবে জনপ্রিয় দলও এলাকাভিত্তিক সীমাবদ্ধতার কারণে কাঙ্ক্ষিত আসন পায় না।

অন্যদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতিতে সব ভোট গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা প্রায়শই জোট সরকারের দিকে ঠেলে দেয়, যার ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগে, রাজনৈতিক সমঝোতা হয় অস্বচ্ছ, আর ভোটারদের সঙ্গে প্রতিনিধিদের দূরত্ব বাড়ে। গণনা পদ্ধতিও বেশ জটিল।

এই দুই চরমের মাঝে একটি ভারসাম্য তৈরি করা সম্ভব—দুই-দফা ভোটিং পদ্ধতির মাধ্যমে।

এই ব্যবস্থায় প্রথমে সাধারণ নির্বাচন হবে। যদি কেউ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান, তবে শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে একটি দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট হবে। এতে করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিজয়ী ব্যক্তি বা দল প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের সমর্থনে নির্বাচিত হয়েছে।

এই পদ্ধতির অনেক ইতিবাচক দিক আছে—ভোটারের ক্ষমতা বাড়ে, কৌশলগত ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়, আর নির্বাচিত প্রার্থীর বৈধতা আরও দৃঢ় হয়। এতে একদিকে যেমন FPTP-এর সরলতা থাকে, অন্যদিকে PR-এর ন্যায্যতাও কিছুটা অর্জন সম্ভব হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি সফলভাবে চালু আছে—ফ্রান্স, চিলি, উরুগুয়ে এমনকি ভারতের কিছু রাজ্যেও পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল ও বিভাজিত বাস্তবতায় দুই-দফা ভোটিং হতে পারে একটি সাহসী কিন্তু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এটি জনগণের প্রতি আস্থা বাড়াবে, প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।

নির্বাচন কেবল বিজয় নির্ধারণের মাধ্যম নয়—এটি হওয়া উচিত জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও মতামতের সঠিক প্রতিফলন।

সাবেক মেয়র, টাওয়ার হ্যামলেটস, লন্ডন


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471