পরীক্ষামূলক প্রকাশনা | ঢাকা ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিকনিকের নাচ-গানের ভিডিও ভাইরাল, অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য করলেন শিক্ষার্থীরা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৩১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

অভিবাসন ডেস্ক :: শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা তাকে নিজ অফিস কক্ষে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলা আইসিটি অফিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার কম্পিউটার ল্যাবটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি ছুটির দিনে প্রশিক্ষণার্থীরা ক্লাস শেষে সেখানে পিকনিক করেন। পিকনিক শেষে তারা নাচ-গান পরিবেশন করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে আজ সকালে মাদরাসা খুললে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন। একপর্যায়ে অফিস কক্ষে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ৪ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে তাদের দেওয়া একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন অধ্যক্ষ নুরুল হুদা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হুসাইন আহমেদ বলেন, ‘রাতে নাচ-গানের একটি ভিডিও আমার কাছে আসে। সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি, বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখি, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির গেট তালা দিয়েছেন। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।’

মাদরাসার কামিল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘নাচ-গানের ভিডিও ইসলামের অনুভূতিতে আঘাত এনেছে। একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা আমরা মানতে পারিনি। এর জন্য অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তার বিচার হোক।’

মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার দিন শুক্রবার মাদরাসা বন্ধ ছিল। সেদিন আমি মাদরাসাতে ছিলাম না। তার অনুমতি না নিয়ে প্রশিক্ষক প্রবির বিশ্বাস পিয়নের থেকে চাবি নিয়ে ল্যাবের রুমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। শুনেছি, বিকেলে শিক্ষার্থীরা পিকনিক করে এবং নাচ-গানও করেছিল। যেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মাদরাসা খুললে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ১০টায় অফিস কক্ষে আমাকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু জেলার একটি মিটিংয়ে থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তাকে মাদরাসাতে আসেন। কিন্তু তিনিও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের চাপে দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।’ তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। দ্রুতই শিক্ষকদের ডেকে সার্বিক বিষয়ে বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো সরকারি নির্দেশনায়ও নেই।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

উত্তরায় প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানো কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্য আটক

পিকনিকের নাচ-গানের ভিডিও ভাইরাল, অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য করলেন শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় ০৫:৩১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

অভিবাসন ডেস্ক :: শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা তাকে নিজ অফিস কক্ষে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলা আইসিটি অফিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার কম্পিউটার ল্যাবটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি ছুটির দিনে প্রশিক্ষণার্থীরা ক্লাস শেষে সেখানে পিকনিক করেন। পিকনিক শেষে তারা নাচ-গান পরিবেশন করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে আজ সকালে মাদরাসা খুললে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন। একপর্যায়ে অফিস কক্ষে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ৪ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে তাদের দেওয়া একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন অধ্যক্ষ নুরুল হুদা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হুসাইন আহমেদ বলেন, ‘রাতে নাচ-গানের একটি ভিডিও আমার কাছে আসে। সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি, বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখি, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির গেট তালা দিয়েছেন। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।’

মাদরাসার কামিল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘নাচ-গানের ভিডিও ইসলামের অনুভূতিতে আঘাত এনেছে। একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা আমরা মানতে পারিনি। এর জন্য অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তার বিচার হোক।’

মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার দিন শুক্রবার মাদরাসা বন্ধ ছিল। সেদিন আমি মাদরাসাতে ছিলাম না। তার অনুমতি না নিয়ে প্রশিক্ষক প্রবির বিশ্বাস পিয়নের থেকে চাবি নিয়ে ল্যাবের রুমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। শুনেছি, বিকেলে শিক্ষার্থীরা পিকনিক করে এবং নাচ-গানও করেছিল। যেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মাদরাসা খুললে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ১০টায় অফিস কক্ষে আমাকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু জেলার একটি মিটিংয়ে থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তাকে মাদরাসাতে আসেন। কিন্তু তিনিও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের চাপে দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।’ তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। দ্রুতই শিক্ষকদের ডেকে সার্বিক বিষয়ে বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো সরকারি নির্দেশনায়ও নেই।’


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464