ঢাকা ০৭:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ওসমানীনগরে যুবদল,স্বেচ্ছাসেবকদল ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অস্ট্রেলিয়াকেও ছাড় দেবেন না বাংলাদেশের কোচ ১১ মাসে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭৬১ মামলা হয়েছে: টিআইবি ভারতের প্রভাবমুক্ত বাংলাদেশ: অন্তর্বর্তী সরকারের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ৩৯ জন বাংলাদেশীকে সামরিক বিমানে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র লিগ্যাল এইড ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আজাদের মায়ের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল রাউজানে বিএনপির দুপক্ষে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪০ বাংলাদেশে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে হানডা ইপিএস কমিউনিটি ইন ফ্রান্সের আনন্দ ভ্রমণ সম্পন্ন সরকারি কাজে বাঁধা ও ইউএনওকে হুমকি ওসমানীনগরে কথিত সমন্বয়কের ২ মাসের কারাদণ্ড

দুর্নীতির অভিযোগে মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েও পাননি তারিকের স্ত্রী-কন্যা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৫৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৬৬ বার পড়া হয়েছে

তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ও তাদের মেয়ে বুশরা সিদ্দিক

অনলাইন ডেস্ক :: ইউরোপের দেশ মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুই দফায় তিনি এ আবেদন করেছিলেন। তবে অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষের অভিযোগ থাকায় তাঁর দুটি আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাঁদের মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের নাগিকত্বের আবেদনও খারিজ করেছিল দেশটির নাগরিকত্ব-বিনিয়োগ প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

শাহীন যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের চাচি এবং বুশরা চাচাতো বোন। টিউলিপ শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ গত বছরের অক্টোবরে তারিক ও শাহীনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে। জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তারিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের অভিযোগে বলা হয়, শাহীন সিদ্দিকের নেতৃত্বাধীন প্রচ্ছায়া নামক একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকায় মূল্যবান জমি দখল করে। শাহীনা তাঁর ২০১৩ সালের পাসপোর্ট আবেদনে প্রচ্ছায়ার চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের ভূমিকা উল্লেখ করেছিলেন।

২০১৩ ও ২০১৫ সালে শাহীন মাল্টার পাসপোর্টের জন্য দুটি আবেদন করেছিলেন। ২০১৫ সালের যৌথ আবেদনে তাঁর মেয়ে বুশরাও (ইংল্যান্ডের নাগরিক) ছিলেন। তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের চাচাতো বোন এবং প্রচ্ছায়ার পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৫ সালের মার্চে করা যৌথ আবেদন অনুযায়ী, শাহীন ও বুশরার নাগরিকত্বের জন্য যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো এবং ২৫ হাজার ইউরো খরচ হতো। পাশাপাশি, হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সকে ৭০ হাজার ইউরো ফি দিতে হতো। আবেদনটি করার সময় শাহীন কুয়ালালামপুরের একটি ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট দেখিয়েছিলেন, যেখানে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার ছিল। এই অর্থ দুই মাসে ১১টি লেনদেনের মাধ্যমে জমা করা হয়েছিল। কিন্তু এর উৎস স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, বাংলাদেশে মুদ্রা সরবরাহের বিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি এক বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি দেশের বাইরে নিতে পারেন না।

বুশরা তখন লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন এবং তার ঠিকানা ছিল সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনের কাছে একটি গথিক ভবনের দ্বিতীয় তলায়। এটি টিউলিপ সিদ্দিকের কিংস ক্রসের ফ্ল্যাট থেকে কয়েক মিনিটের হাঁটা দূরত্বে ছিল।

শাহীনের করা প্রথম নাগরিকত্ব আবেদন ২০১৩ সালে সরাসরি বাতিল হয়ে যায়, কারণ গণমাধ্যমে প্রচ্ছায়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষ সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৫ সালের আবেদনে প্রচ্ছায়ার পরিবর্তে শাহীন তার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর নাম উল্লেখ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালের শেষের দিকে ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, শাহীন সিদ্দিক ও বুশরা দুজনেই নাগরিকত্ব পাননি।

বুশরা পড়াশোনা শেষ করে লন্ডনে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরবর্তীতে জেপি মরগানে কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে তিনি ‘লাইফস্টাইল, ফ্যাশন ও ট্র্যাভেল’ ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি ব্যাংকের চাকরি ছাড়ার কথা জানান। ওই বছরই বুশরা স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে নর্থ লন্ডনে গোল্ডার্স গ্রিনে ১৯ লাখ পাউন্ডে একটি পাঁচ বেডরুমের বাড়ি কিনেছিলেন। ভূমি নিবন্ধন থেকে জানা যায়, এই বাড়ির ওপর কোনও বন্ধকি ঋণ নেই।

বুশরা ইউটিউবে বলেন, আমার কিছু সঞ্চয় ছিল এবং যদি সেগুলো শেষ হয়ে যেত, আমি জানতাম আমার মা-বাবা আছেন।

ট্যাগস :

ওসমানীনগরে যুবদল,স্বেচ্ছাসেবকদল ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

দুর্নীতির অভিযোগে মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েও পাননি তারিকের স্ত্রী-কন্যা

আপডেট সময় ১০:৫৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক :: ইউরোপের দেশ মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুই দফায় তিনি এ আবেদন করেছিলেন। তবে অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষের অভিযোগ থাকায় তাঁর দুটি আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাঁদের মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের নাগিকত্বের আবেদনও খারিজ করেছিল দেশটির নাগরিকত্ব-বিনিয়োগ প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

শাহীন যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের চাচি এবং বুশরা চাচাতো বোন। টিউলিপ শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ গত বছরের অক্টোবরে তারিক ও শাহীনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে। জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তারিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের অভিযোগে বলা হয়, শাহীন সিদ্দিকের নেতৃত্বাধীন প্রচ্ছায়া নামক একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকায় মূল্যবান জমি দখল করে। শাহীনা তাঁর ২০১৩ সালের পাসপোর্ট আবেদনে প্রচ্ছায়ার চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের ভূমিকা উল্লেখ করেছিলেন।

২০১৩ ও ২০১৫ সালে শাহীন মাল্টার পাসপোর্টের জন্য দুটি আবেদন করেছিলেন। ২০১৫ সালের যৌথ আবেদনে তাঁর মেয়ে বুশরাও (ইংল্যান্ডের নাগরিক) ছিলেন। তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের চাচাতো বোন এবং প্রচ্ছায়ার পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৫ সালের মার্চে করা যৌথ আবেদন অনুযায়ী, শাহীন ও বুশরার নাগরিকত্বের জন্য যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো এবং ২৫ হাজার ইউরো খরচ হতো। পাশাপাশি, হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সকে ৭০ হাজার ইউরো ফি দিতে হতো। আবেদনটি করার সময় শাহীন কুয়ালালামপুরের একটি ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট দেখিয়েছিলেন, যেখানে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার ছিল। এই অর্থ দুই মাসে ১১টি লেনদেনের মাধ্যমে জমা করা হয়েছিল। কিন্তু এর উৎস স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, বাংলাদেশে মুদ্রা সরবরাহের বিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি এক বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি দেশের বাইরে নিতে পারেন না।

বুশরা তখন লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন এবং তার ঠিকানা ছিল সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনের কাছে একটি গথিক ভবনের দ্বিতীয় তলায়। এটি টিউলিপ সিদ্দিকের কিংস ক্রসের ফ্ল্যাট থেকে কয়েক মিনিটের হাঁটা দূরত্বে ছিল।

শাহীনের করা প্রথম নাগরিকত্ব আবেদন ২০১৩ সালে সরাসরি বাতিল হয়ে যায়, কারণ গণমাধ্যমে প্রচ্ছায়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচার, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষ সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৫ সালের আবেদনে প্রচ্ছায়ার পরিবর্তে শাহীন তার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর নাম উল্লেখ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালের শেষের দিকে ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, শাহীন সিদ্দিক ও বুশরা দুজনেই নাগরিকত্ব পাননি।

বুশরা পড়াশোনা শেষ করে লন্ডনে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরবর্তীতে জেপি মরগানে কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে তিনি ‘লাইফস্টাইল, ফ্যাশন ও ট্র্যাভেল’ ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি ব্যাংকের চাকরি ছাড়ার কথা জানান। ওই বছরই বুশরা স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে নর্থ লন্ডনে গোল্ডার্স গ্রিনে ১৯ লাখ পাউন্ডে একটি পাঁচ বেডরুমের বাড়ি কিনেছিলেন। ভূমি নিবন্ধন থেকে জানা যায়, এই বাড়ির ওপর কোনও বন্ধকি ঋণ নেই।

বুশরা ইউটিউবে বলেন, আমার কিছু সঞ্চয় ছিল এবং যদি সেগুলো শেষ হয়ে যেত, আমি জানতাম আমার মা-বাবা আছেন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471