ঢাকা ১২:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা, প্রাণ গেল দু’জনেরই

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:১২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

রেল লাইন। ফাইল ছবি

অভিবাসন ডেস্ক :: ‘রাফসাকে নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আর ফিরব না। তোমার সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হবে না।’ স্বামী রাসেল আহমেদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এ কথা বলার পরই নাসরিন আক্তার এক বছর বয়সী কন্যাকে কোলে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন চলন্ত ট্রেনের নিচে। ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নাসরিনের দেহ। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে একটু দূরে গিয়ে পড়ে শিশু রওজাতুল জান্নাত রাফসার নরম শরীর। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাফসাও পাড়ি জমায় মায়ের ঠিকানায়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় ঢাকা-জামালপুর রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গোপালগঞ্জের নাসরিনের বিয়ে হয় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব গ্রামের রাসেল আহমেদের সঙ্গে। শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামে তারা ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাসেল চাকরি করেন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায়। জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নাসরিন শিশুকন্যাকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সাতখামাইর রেলস্টেশনের উত্তর দিকে একটি আমগাছের নিচে ওই নারী শিশুকন্যাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় বসে ছিলেন। টেলিফোনে কথাও বলেছেন কারও সঙ্গে। এ সময় স্থানীয়রা তাঁকে কান্নাকাটি করতেও দেখেছেন। এক পর্যায়ে তিনি মেয়েকে জাপটে ধরে দৌড়ে গিয়ে মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান নাসরিন। চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় শিশুটি রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে। আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় রাফসা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন নাসরিনের স্বামী রাসেল ও দেবর সাগর আহমেদ।

রাসেল বলেন, ক’দিন ধরে আমি কারখানায় যাচ্ছিলাম না। এ নিয়ে নাসরিনের সঙ্গে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। এটি জটিল কোনো বিষয় না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, স্ত্রী ও মেয়ে ঘরে নেই। মোবাইল ফোনে কল দিলে নাসরিন জানায়, রাফসাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর কোনোদিন ফিরবে না। দেখা হবে না। তিনি বলেন, এসব কথা শুনে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ফোনকল কেটে দেন নাসরিন।

ট্যাগস :

মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা, প্রাণ গেল দু’জনেরই

আপডেট সময় ০২:১২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

অভিবাসন ডেস্ক :: ‘রাফসাকে নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আর ফিরব না। তোমার সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হবে না।’ স্বামী রাসেল আহমেদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এ কথা বলার পরই নাসরিন আক্তার এক বছর বয়সী কন্যাকে কোলে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন চলন্ত ট্রেনের নিচে। ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নাসরিনের দেহ। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে একটু দূরে গিয়ে পড়ে শিশু রওজাতুল জান্নাত রাফসার নরম শরীর। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাফসাও পাড়ি জমায় মায়ের ঠিকানায়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় ঢাকা-জামালপুর রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গোপালগঞ্জের নাসরিনের বিয়ে হয় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব গ্রামের রাসেল আহমেদের সঙ্গে। শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামে তারা ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাসেল চাকরি করেন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায়। জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নাসরিন শিশুকন্যাকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সাতখামাইর রেলস্টেশনের উত্তর দিকে একটি আমগাছের নিচে ওই নারী শিশুকন্যাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় বসে ছিলেন। টেলিফোনে কথাও বলেছেন কারও সঙ্গে। এ সময় স্থানীয়রা তাঁকে কান্নাকাটি করতেও দেখেছেন। এক পর্যায়ে তিনি মেয়েকে জাপটে ধরে দৌড়ে গিয়ে মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান নাসরিন। চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় শিশুটি রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে। আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় রাফসা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন নাসরিনের স্বামী রাসেল ও দেবর সাগর আহমেদ।

রাসেল বলেন, ক’দিন ধরে আমি কারখানায় যাচ্ছিলাম না। এ নিয়ে নাসরিনের সঙ্গে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। এটি জটিল কোনো বিষয় না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, স্ত্রী ও মেয়ে ঘরে নেই। মোবাইল ফোনে কল দিলে নাসরিন জানায়, রাফসাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর কোনোদিন ফিরবে না। দেখা হবে না। তিনি বলেন, এসব কথা শুনে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ফোনকল কেটে দেন নাসরিন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/obhibason/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471