ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
হার দিয়ে শুরু স্বাগতিক সিলেটের শান্তর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ভর করে জিতে গেল রাজশাহী ইমন ঝড়ে স্বাগতিক সিলেটের বড় সংগ্রহ ১৯১ লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে রাজশাহী ওসমানীনগরে আলোচিত অটোরিকশা চালক শিপন হত্যাকাণ্ড প্যারিসে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘পতাকা সম্মিলন ডেঙ্গুতে ছেলের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর মারা গেলেন মা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে নেওয়া হলো ডিবি কার্যালয়ে ফরাসি নাট্যচর্চায় বিসিএফ সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশি সোয়েব মোজাম্মেল প্যারিসে ৭মবারের মতো বিসিএফ’র কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা প্রদান লন্ডনে ‘গান ও আড্ডার’ বর্ষপূর্তি উদযাপন যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের ‘আশ্রয় আবেদন’ স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন

সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি সোমবার স্থগিত

অভিবাসন ডেস্ক :: দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কর্মসূচি আগামীকাল সোমবার একদিনের জন্য স্থগিত করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি আগের মতোই চলবে।

রোববার রাত সাড়ে ৯টায় সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য সমকালকে নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ ও খায়রুন নাহার লিপি।

খায়রুন নাহার লিপি রাত সাড়ে ৯টায় সমকালকে বলেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আরেকটি বৈঠক হবে। সে পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করছি। তবে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ চলবে।

এর আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে কর্মবিরতি চলছে। যদিও কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। তারা পুলিশি হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগ দাবি করেন।

সকালে শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না করা, শাহবাগে অতর্কিত হামলা, রাবার বুলেট, জলকামান, টিয়ার গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে শিক্ষক আহত করার দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে নিতে হবে।

দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো– চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। এ মোর্চায় আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

গত শনিবার সকাল থেকে এ তিন দাবিতে শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগোতে থাকলে শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে শিক্ষকদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা। পরে রোববার দুপুর ১টার দিকে আটক পাঁচ শিক্ষককে ছেড়ে দেয় শাহবাগ থানা পুলিশ।

পুলিশের হেফাজত থেকে মুক্ত শিক্ষকরা হলেন জয়পুরহাটের মু. মাহবুবুর রহমান, পটুয়াখালীর নজরুল ইসলাম লিটন, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের আব্দুল কাদের, ধামরাইয়ের শরিফুল ইসলাম ও কুমিল্লার সোহেল রানা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সায়েদুর রহমান আকন্দের জিম্মায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। জিম্মানামায় উল্লেখ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাঁচ শিক্ষককে জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হলো।

বিভিন্ন স্থানে কর্মবিরতি
মাদারীপুরের শিবচরের ১১৪ নম্বর ওমর ব্যাপারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার ক্লাস বর্জন চলবে।

বরিশালের হিজলার পশ্চিম চর বাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ। এ ছাড়া ঝালকাঠির নলছিটির ৭২ নম্বর দক্ষিণ তিমিরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার বৈদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ২১ নম্বর চারিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালিত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্কুলটি সহকারী শিক্ষক ও ঐক্য পরিষদের নেতা শাহিনুর আল আমিন। তিনি বলেন, শিক্ষকের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আহতদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছি, কথা বলেছি। তবে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি না।

ট্যাগস :

হার দিয়ে শুরু স্বাগতিক সিলেটের শান্তর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ভর করে জিতে গেল রাজশাহী

সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি সোমবার স্থগিত

আপডেট সময় ০১:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

অভিবাসন ডেস্ক :: দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কর্মসূচি আগামীকাল সোমবার একদিনের জন্য স্থগিত করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি আগের মতোই চলবে।

রোববার রাত সাড়ে ৯টায় সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য সমকালকে নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ ও খায়রুন নাহার লিপি।

খায়রুন নাহার লিপি রাত সাড়ে ৯টায় সমকালকে বলেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আরেকটি বৈঠক হবে। সে পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করছি। তবে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ চলবে।

এর আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে কর্মবিরতি চলছে। যদিও কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। তারা পুলিশি হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগ দাবি করেন।

সকালে শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না করা, শাহবাগে অতর্কিত হামলা, রাবার বুলেট, জলকামান, টিয়ার গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে শিক্ষক আহত করার দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে নিতে হবে।

দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো– চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। এ মোর্চায় আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

গত শনিবার সকাল থেকে এ তিন দাবিতে শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগোতে থাকলে শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে শিক্ষকদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা। পরে রোববার দুপুর ১টার দিকে আটক পাঁচ শিক্ষককে ছেড়ে দেয় শাহবাগ থানা পুলিশ।

পুলিশের হেফাজত থেকে মুক্ত শিক্ষকরা হলেন জয়পুরহাটের মু. মাহবুবুর রহমান, পটুয়াখালীর নজরুল ইসলাম লিটন, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের আব্দুল কাদের, ধামরাইয়ের শরিফুল ইসলাম ও কুমিল্লার সোহেল রানা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সায়েদুর রহমান আকন্দের জিম্মায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। জিম্মানামায় উল্লেখ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাঁচ শিক্ষককে জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হলো।

বিভিন্ন স্থানে কর্মবিরতি
মাদারীপুরের শিবচরের ১১৪ নম্বর ওমর ব্যাপারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার ক্লাস বর্জন চলবে।

বরিশালের হিজলার পশ্চিম চর বাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ। এ ছাড়া ঝালকাঠির নলছিটির ৭২ নম্বর দক্ষিণ তিমিরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার বৈদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ২১ নম্বর চারিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালিত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্কুলটি সহকারী শিক্ষক ও ঐক্য পরিষদের নেতা শাহিনুর আল আমিন। তিনি বলেন, শিক্ষকের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আহতদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছি, কথা বলেছি। তবে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি না।