ওসমানীনগর(সিলেট)প্রতিনিধি ::অনলাইন জুয়া খেলার আয়ের টাকা দিয়ে অটোরিকশা ক্রয়ের লেনদেনের জেরে ছরতা দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে অটোরিকশা চালক শিপনকে হত্যা করে লাশ পেলে দিয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূল জবানবন্দি প্রদান কালে সিলেটের ওসমানীনগরে আলোচিত শিপন হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করেন মামলার প্রধান আসামি কবির আলম টিপু (৩০)।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সিলেটের জুডিশিয়াল আমলী ৪নং আদালতের বিচারক ইয়াছমিন আক্তারের আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
আদালতের বরাত দিয়ে শিপন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে অটোরিকশা চালক শিপন হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার শিবপুর (আউতহাটি) গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের ছেলে কবির আলম টিপকে একই এলাকার বাউশারী (রামচন্দ্রপুর)গ্রামের তার ফুফা হাসিম আলীর বাড়ি থেকে গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। পরে পুলিশ আসামীকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউপির চাতলপাড় নদি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছরতা ও নেত্রকোনা থেকে লুন্ঠিত অটোরিকশা উদ্ধার করে।
আদালত ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বরাত থেকে জানা যায়, আসামী কবির আলম টিপু ঘটনা কয়েক দিন পূর্বে অনলাইনে জুয়া খেলে ৭০,০০০/-টাকা লাভ করে। এই টাকা দিয়ে আসামী কবির আলম টিপু একটি সিএনজি অটোরিকশা গাড়ী ক্রয় করে দেওয়ার জন্য ভিকটিম শিপন আহমদকে প্রস্তাব করে। সিএনজি গাড়ী ক্রয় বাবদ ভিকটিম শিপন আহমদকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও আসামী কবির আলম টিপু ঘটনার সময় ৮০ হাজার টাকা দেয়। সিএনজি গাড়ী ক্রয়-বিক্রয় করা কালে আসামী কবির আলম টিপু ৭০ হাজার টাকা কম দেওয়ায় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাটির এক পর্যায়ে আসামী কবির আলম টিপু তার মায়ের জন্য ক্রয়কৃত ছরতা দিয়া এলোপাতারি ভাবে কোপাইয়া শিপন আহমদকে হত্যা করে সিএনজি অটোরিকশা গাড়ী নিয়া পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, সিলেটের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের সার্বিক দিক নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানীনগর(সার্কেল) মানছুরা বেগমের সার্বিক সহযোগিতায় ও অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুরশেদুল আলম ভূইয়ার নেতৃত্বে আমি ও এসআই আশীষ চন্দ্র তালুকদার সহ একদল সহকর্মীদের সহযোগীতায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীকে গ্রেফতার ও মামলার রহস্য উদঘাটন করে সক্ষম হই।
ওসমানীনগর থানার ওসি মোঃ মুরশেদুল আলম ভূইয়া বলেন, শিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে লুন্ঠিত সিএনজি ও হত্যাকাণ্ডে ব্রবহৃত ছরতা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত ১৪ ডিসেম্বর উপজেলার দয়ামীর ইউপির রাইকদাড়া(গাংপাড়) গ্রামের আশরফ আলীর ছেলে সিএনজি অটোরিকশা চালক শিপন আহমদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উপজেলার সাদিপুরের চাতলপাড় কেশবপুর সেতু নিচ থেকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। পর নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ব্যাপক তদন্তের মাধ্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িতদের পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
নিজস্ব সংবাদ : 













